রাইসুল ইসলাম, পার্বতীপুর (দিনাজপুর)
দিনাজপুরের পার্বতীপুরে শিশু ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামী সাইফুল ইসলাম ওরফে কালা সাইফুলকে (৪২) জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দিনাজপুর কোতওয়ালী থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এর আগে পার্বতীপুর মডেল থানা থেকে পুলিশের একটি টিম দিনাজপুর গমন করে। টিম প্রধান হিসেবে রয়েছেন ইন্সপেক্টর (ওসি তদন্ত) মোঃ বেলাল হোসেন। এছাড়াও রয়েছেন মামলা তদন্তকারী দারোগা উপপরিদর্শক স্বপন কুমার চৌধুরী, এসআই হারুনুর রশিদ ও দু’জন কনেস্টবল।
পার্বতীপুর মডেল থানার অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) মাহমুদুল আলম এ প্রতিনিধিকে জানান, গণরোষের কারনে আসামী সাইফুল ইসলামকে পার্বতীপুর থানায় আনা সম্ভব হয়নি। তিনি বলেন থানা থেকে যে পুলিশের টিম দিনাজপুর গেছেন, তারা ৭দিনের রিমান্ড আদেশের কাগজ শুক্রবার বিকেল ৪টায় আদালত থেকে পেয়েছেন। এরপর তারা যথারীতি আসামীকে তাদের হেফাজতে নিয়ে কোতওয়ালী থানায় জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছেন বলে তিনি উল্লেখ করেন।
এদিকে, শিশু ধর্ষণ মামলায় প্রধান আসামী সাইফুল ইসলাম ওরফে কালা সাইফুলের ফাঁসি ও ভন্ড কবিরাজ আফজাল হোসেন বাদীয়কে দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানিয়ে আগামী ৩১ অক্টোবর সমবার পার্বতীপুরের রামপুর ইউনিয়নের জমির হাট হাইস্কুল ও রঘুনাথপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পার্বতীপুর-রংপুর সড়কের মানব বন্ধন কর্মসূচি পালন করবেন বলে জানাগেছে। জমির হাট হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক মোঃ জাহাঙ্গীর আলম জানান, ৫বছর বয়সী শিশু ধর্ষণ ঘটনায় আমাদের সবার মধ্যে রক্ত ক্ষরন হচ্ছে। আমরা নরপিচাসের দ্রুত বিচার আদালতে বিচারের দাবি জানিয়েছি। আমরা তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়েছি একারনে যে, আমাদের সমাজ যেন এসব দুর্বৃত্তদের হাত থেকে মুক্তি পায়। আমাদের সন্তানরা যেন কলুষমুক্ত সমাজে বেড়ে উঠতে পারে। ধর্ষিতা শিশু পূজা রাণীর দাদু অনিল চন্দ্র দাস (৬৫) বলেন, এমন পৈশাচিক ঘটনা আমার জীবনে দেখিনি। মানুষ এমন পশু হতে পারে তা আমার ভাবতেও কষ্টো হয়। সাইফুল ইসলাম ওরফে কালা সাইফুল একজন দুর্বৃত্তপরায়ন মানুষ, দুর্বৃত্তপনার কারনে তার সংসার তছনছ হয়ে গেছে। তাই বলে নিষ্পাপ এক শিশুর জীবন এভাবে ধ্বংস করে দিবে সে কথা আমরা কল্পনাও করতে পারিনি। পূজার কাকা মদন চন্দ্র দাস (২৫) বলেন, তার ভাতিজির মৃত্যু হয়েছে ভেবে দুর্বৃত্ত সাইফুল নিথর দেহটি হলুদের ক্ষেতে ফেলে রাখে। তার আগে পূজার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় সিগারেটের আগুন দিয়ে ছ্যাকা দেওয়া হয়েছে, রক্তাত্ত করা হয়েছে। আর এসব করা হয়েছিলো পূজার নিশ্চিত মৃত্যু হয়েছে ভেবে। কিন্তু স্রষ্টার অপার মহিমায় দীর্ঘ সময় পরে পূজার জ্ঞান ফিরে আসে। মদন চন্দ্র দাস তার ভাতিজির উপর পৈশাচিক ঘটনায় সব বয়সের ও সব শ্রেনী পেশার মানুষের সমবেদনায় কৃতজ্ঞতা জানান।
0 facebook: