রাইসুল ইসলাম, পার্বতীপুর (দিনাজপুর)
‘মোটা হলেই দারোগা
হয়না’। আমাদের গ্রাম দেশের বহু পুরনো প্রবাদ বাক্য এটি। বাংলাদেশ রেলওয়ের
পশ্চিমযোনেও অনুরুপ কথা শোনা যায় প্রায়শঃ। বিষয়টি হচ্ছে কর্মরত স্টেশন
মাষ্টার, সহকারী স্টেশন মাষ্টার, টিকিট কালেক্টর, পোর্টার, পয়েন্টসম্যান,
ট্রেনের গার্ড, কন্ডাক্টর গার্ড, ড্রাইভার, এসিস্ট্যান্ট ড্রাইভার (এএলএম),
টিটিই, পাওয়ারকার ড্রাইভার, এনাউন্সার, এসি অপারেটর, এটেনডেন্ট এদের সবার
ডিউটিকালীন ইউনিফম সাদা রঙের। ট্রেনের অশিক্ষিত, স্বল্প শিক্ষিত সাধারন
যাত্রীরা জানেনা এদের কার কি দায়িত্ব। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে অনেক অসাধু রেল
কর্মচারী দু’হাতে লুটে নিচ্ছে। পশ্চিমযোনের আন্তঃনগর ট্রেন সমূহের
এটেনডেন্টের ডিউটি সম্পর্কে সম্ভবতঃ তারা নিজেরাও জানেনা। যে কাজ তারা করে
থাকে সেটা তাদের ডিউটির মধ্যে পড়েনা।
পার্বতীপুরে কর্মরত জেআরআই
নার্গিস পারভিন জানান যাত্রীদের কোন সমস্যা হলে অথবা কোন কিছু প্রয়োজন মনে
করলে কর্মরত এটেনডেন্ট ওই যাত্রীদের সেবায় এগিয়ে যাবেন। তিনি আরও বলেন,
যাত্রী সেবার জন্যই রেলওয়েতে এ পদটির সৃষ্টি করা হয়েছে। কিন্তু দুঃখজনক
হলেও এটেনডেন্টরা তাদের দায়িত্বের বাহিরে গিয়ে যাত্রীদের টিকিট চেক করে
থাকেন। বিভিন্ন স্টেশন থেকে বিনা টিকিটের যাত্রীদের ট্রেন ভ্রমণের সুযোগ
করে দেন এবং গন্তব্যস্থলে পৌছে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া যায় প্রতিদিন। এর ফলে
বাংলাদেশ রেলওয়ে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব প্রতিদিন হারাচ্ছে বলে তিনি উল্লেখ
করেন।
অন্যদিকে, পার্বতীপুরসহ রেলওয়ের পশ্চিমযোনের বিভিন্ন রেল
স্টেশনের কর্মরত পোর্টার পয়েন্টন্সম্যান ও গেট কিপারদের অনেকে সাদা
ইউনিফর্মের সুযোগ নিয়ে টিকিট কালেক্টরের দায়িত্ব পালন করার নামে যাত্রী
হয়রানি করে থাকে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এব্যপারে পার্বতীপুর
উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ার্যামন মোঃ হাফিজুল
ইসলাম প্রামানিক, সাধারন সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইচ চেয়ারম্যান
মোঃ রেজাউল করিম ও যুগ্ন সাধারন সম্পাদক মোঃ আমজাদ হোসেন, আহব্বায়ক
পার্বতীপুর উপজেলা ছাত্রলীগ মিঠনু কুমার, রেলওয়েতে কর্মরত উল্লেখিত
স্টাফদের পোষাক নিয়ে বিড়ম্বনা ও হয়রানির কথা উল্লেখ করেন। সেইসাথে বিষয়টি
দ্রুত সমাধানের জন্য রেলওয়ের যথাযথ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষন করেছেন তারা।
পশ্চিমযোনের কর্মরত বেশ ক’জন টিটিইও গার্ড পোষাক নিয়ে বিড়ম্বনার বিষয়টি
স্বীকার করেছেন। এব্যপারে আন্তঃনগর দ্রুতযান ও একতা এক্সপ্রেস ট্রেনে
কমপক্ষে ৫জন এটেনডেন্ট তাদের নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সবাই খারাপ
এমন কথা বলা যাবেনা। তবে, অসৎ স্টাফদের কারনে সব এটেনডেন্টের দুর্নাম হচ্ছে
বলে তারা উল্লেখ করেন।
বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ের
পশ্চিমযোনের ডেপুটি সিসিএম এমএ জিন্নাহ’র সাথে আজ রবিবার মোবাইল ফোনে কথা
হয়েছে। তিনি বলেন, পোষাক বিড়ম্বনার বিষয়টি আমাদের নলেজে আছে। যাত্রীদের কাছ
থেকে এটেনডেন্টরা টিটিই সেজে টিকিট চেক করে থাকে এমন অভিযোগ আমরা প্রায়ই
শুনতে পাই। তবে বিষয়টি কেবল জিএম এবং ডিজি মহোদয় সমাধান করতে পারেন বলে
তিনি উল্লেখ করেন। এব্যপারে রেলওয়ের পশ্চিমযোনের মহাব্যবস্থাপকের বক্তব্য
জানার জন্য রবিবার একাধিকবার তার মুঠো ফোনে কল দিলেও ফোন রিসিভ না করায়
বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
0 facebook: