Sunday, February 5, 2017

মধ্যপাড়া কঠিন শিলা খনি দীর্ঘ ১৬ মাস বন্ধ থাকার পর শুরু হয়েছে খনির উন্নয়নমূলক কাজ

রাইসুল ইসলাম, পার্বতীপুর (দিনাজপুর)
দিনাজপুরের পার্বতীপুরে দেশের একমাত্র মধ্যপাড়া পাথর খনি দীর্ঘ ১৬ মাস উৎপাদন বন্ধ থাকার পর পূনরায় পাথর উত্তোলনের লক্ষ্যে দ্বিতীয় শিফ্টের উন্নয়নমূলক কাজ গতকাল শনিবার থেকে শুরু হয়েছে ।
খনির ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান জার্মানীয়া ট্রেস্ট কনসোর্টিয়াম (জিটিসি) সূত্র বলেছে, সাময়িক কর্মবিরতিতে থাকা খনির শ্রমিক ও কর্মচারীরা ইতিমধ্যেই পূনরায় চাকুরীতে যোগদান শুরু করেছেন।
জিটিসি সূত্র জানায়, পাথর খনির উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে খনির ভূ-গর্ভে নতুন স্টোপ (শিলা উৎপাদন ইউনিট) নির্মানসহ খনির উন্নয়নে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে বিশ্বমানের অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি, যন্ত্রাংশ আমদানী করা হয়েছে। এসব যন্ত্রপাতি ও যন্ত্রাংশ আমদানী প্রক্রিয়ায় বিলম্ব হওয়ায় খনির উন্নয়ন কর্মকান্ডে বিঘœ ঘটে। এর ফলে ১৬ মাস উৎপাদন বন্ধ থাকে। বেকার হয়ে পড়ে ৪৬০ জন শ্রমিক ও কর্মচারী।
জিটিসি আরও জানায়, ২০১৫ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর খনিতে উৎপাদন বন্ধ হয়। তার আগে খনিতে ৩ শিফ্টে পাথর উত্তোলন করছিল জিটিসি। খনির ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে জিটিসি ২০১৩ সালের ২ সেপ্টেম্বর চুক্তিমূলে দায়িত্ব গ্রহন করে এবং ২০১৪ সালের ২৪ ফেব্র“য়ারী থেকে বাণিজ্যিকভিত্তিতে পাথর উত্তোলন শুরু করে। জিটিসি দায়িত্ব গ্রহনের পর দ্রুত এক শিফ্টের জায়গায় দুই শিফ্ট ও পরে তিন শিফ্টে পাথর উত্তোলন করে। এসময় ৪৬০ জন শ্রমিক ৩ শিফ্টে কাজ করে। জিটিসি দায়িত্ব গ্রহনের পর ২০১৫ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রায় ১২ লাখ মেট্রিক টন পাথর উত্তোলন করা হয়। এর আগে মধ্যপাড়া কঠিন শিলা খনি কর্তৃপক্ষ ২০০৭ সালের ২৫ মে খনির ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নামনাম এর নিকট উৎপাদন ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব বুঝে নেয়। এমজিএমসিএল কর্তৃপক্ষ তাদের সময়ে কোরিয়ান বিশেষজ্ঞদের সহায়তায় প্রতিদিন গড়ে ৭০০ থেকে ৮০০ মেট্রিক টন পাথর উত্তোলন করছিলো।  
এদিকে, খনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মোঃ মাহমুদ খান বলেন, খনির উৎপাদন বন্ধ হওয়ার সময় খনি ইয়ার্ডে ৬ লাখ মেঃটন পাথর মজুদ ছিল। এর পুরোটাই ইতিমধ্যে বিক্রি হয়ে গেছে। তিনি আরও জানান, গত শনিবার দ্বিতীয় শিফ্টের  উন্নয়নমূলক কাজের সময় ২৩৮ মেঃটন পাথর উঠে এসেছে। আগামী ২০ মার্চের মধ্যে খনিতে তিন শিফ্টে উন্নয়নমূলক কাজ সমাপ্ত হবে। আগামী এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহ থেকে মধ্যপাড়া খনিতে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে পূনরায় পাথর উত্তোলন শুরু হবে। পর্যায়ক্রমে এখানে ৪ শিফ্টেও পাথর উত্তেলন করা হবে বলে তিনি জানান।
ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরও বলেন, এর আগে প্রতি শিফ্টে শ্রমিকেরা ৮ ঘন্টা করে কাজ করতো। ৪ শিফটের কাজ শুরু হলে ওই শ্রমিকেরা প্রতি শিফ্টে ৬ ঘন্টা করে কাজ করবে। এতে শ্রমিকের কাজের মান এবং পাথর উত্তোলন বৃদ্ধি পাবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। 

শেয়ার করুন

0 facebook: