Tuesday, February 14, 2017

আলোচিত মাদক সম্রাট আনোয়ার মেম্বর অবশেষে গ্রেফতার

রাজীব মাহমুদ

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা এলাকার কুখ্যাত মাদক সম্রাট ও অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী
আনোয়ার হোসেন মেম্বরকে পুলিশ রোববার  দুপুরে গ্রেফতার করেছে। তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজী ও এলাকায় ইয়াবা ব্যবসার অভিযোগ রয়েছে। ত্রীলোচনপুর ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের মেম্বর আনোয়ার বালিয়াডাঙ্গ ধানহাটাপাড়ার মুত আবুল খায়েরের ছেলে। অভিযোগ উঠেছে ২০১৬ সালের ২৬ নভেম্বর আদালতের
ওয়ারেন্ট থাকার পরও কালীগঞ্জ থানার কতিপয় দারোগা এই ইয়াবা স¤্রাটের সাথে বালিয়াডাঙ্গা বাজারে
নিয়মিত আড্ডা দিত। এ নিয়ে জনমনে বিরুপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। আনোয়ার মেম্বরের মাদক ব্যবসা নিয়ে
দৈনিক ইনকিলাব, মানবজমিন, দিনকাল, সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, বিভিন্ন অনলাইন ও
যশোর, কুষ্টিয়া ও চুয়াডাঙ্গার আঞ্চলিক দৈনিক পত্রিকায় তথ্য বিত্তিক খবর প্রকাশিত হওয়ায় পুলিশ তৎপর হয় এবং রোববার তাকে গ্রেফতার করে। কোটচাঁদপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ রেজাউল করিম রেজা জানান, আনোয়ার হোসেন একজন মাদক ব্যবসায়ী। তার বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট থাকায় গোপন সুত্রে খবর পেয়ে তাকে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়। তার বিরুদ্ধে অন্যান্য অভিযোগও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তিনি আরো
জানান, সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক মাদক ব্যবসায়ীর সাথে জড়িত কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না। সাংবাদিক ও পুলিশের মধ্যে মিডিয়া বান্ধব খ্যাত রেজাউল করিম জানান, এই অঞ্চলকে মাদক ও জঙ্গীবাদ নির্মূলে বিশেষ কর্মসুচি হাতে নেওয়া হয়েছে। যত প্রভাবশালী হোক না কেন সর্বনাশা এই ব্যবসার সাথে জড়িত কেও রেহাই পাবে না। উল্লেখ্য আনোয়ার মেম্বর জনপ্রতিনিধি ও সরকারি দলের নেতা পরিচয় দিয়ে গড়ে তোলেন ইয়াবা খোরদের বিরাট সাম্রাজ্য। মোটরসাইকেলে জেলার বিভিন্ন বাজারে তিনি ইয়াবা পৌঁছে দিয়ে থাকেন  বলে অভিযোগ। ইয়াবায় আসক্তদের জন্য পূর্ব বালিয়াডাঙ্গা গ্রামে মৃত মসলম উদ্দীনের ছেলেআব্দুল মমিনের পুকুর পাড়ে দুইরুম বিশিষ্ট ঘর তোলা হয়। অভিযোগ পাওয়া গেছে, আব্দুল মোমিনের সার গোডাউনটি দখল করে নেন আনোয়ারমেম্বার। আর সেখানেই নির্বিঘেœ চলতো ইয়াবা সেবন আর কেনা-বেচার জমপেশ ব্যবসা। পত্রিকায় খবর প্রকাশিত হলে সেখানে দলীয় সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে ইয়াবা ব্যবসা করা হচ্ছিল। সরেজমিন এলাকায়খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আনোয়ার মেম্বর এক সময় বিপ্লবী কমিউনিস্ট পার্টির ক্যাডার ছিলেন। তার অস্ত্রধারী ক্যাডারদের ভয়ে মানুষ তটস্থ থাকতো। বহু মানুষকে তিনি পিটিয়ে জখম করেছেন। বিপ্লবী কমিউনিস্ট পার্টির শোচনীয় পরিস্থিতিতে তিনি যোগ দেন বিএনপিতে।
বিএনপিতে যোগ দিয়ে আনোয়ার মেম্বর হয়ে ওঠেন অপ্রতিরোধ্য। তার অত্যাচারে বালিয়াডাঙ্গার বিপুল কুমারসহ এলাকার অসংখ্য সংখ্যালঘু ভারতে পাড়ি জমান। দখল করে নেন তাদের সহায় সম্পদ। বিএনপির মধু শেষ হলে মাদক স¤্রাট আনোয়ারআওয়ামী লীগের আব্দুল মান্নান গ্রুপে যোগ দেন। শুরু হয় আনোয়ার মেম্বরের নতুন মিশন।
বিচারের নামে চাঁদাবাজী ও মাদক ব্যবসা
বিষয়টি জানতে পেরে বাঁশিওয়ালা বিল্লাল জীবন বাঁচাতে রাতের আঁধারে স্ত্রী সন্তান ফেলে পালিয়ে যায়। বিল্লালের সাজানো সংসার ভেঙে দেয় আনোয়ার মেম্বর।
তার প্রধান হাতিয়ার হয়ে ওঠে। আবু তাহেরের মেয়ের প্রেম ঘটিত বিষয় নিয়ে বিচারের নামে ৪০ হাজার টাকা জোরপূর্বক আদায় করা হয়। বানুড়িয়া গ্রামের আনসার আলীকে বাজারে প্রকাশ্যে পিটিয়ে মারাত্মক জখম করা হয়। বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের তনু মিয়ার দুবাই প্রবাসী ছেলে শাহজাহান বাড়ি আসলে রানী ঘটিত কেলেংকারী দিয়ে তার পাসপোর্ট আটকিয়ে ৩৮ হাজার টাকা আদায় করে। অভিযোগ পাওয়া গেছে .নাটোর জেলার বাঁশিওয়ালা বিল্লাল হোসনের স্ত্রী ছিল সুন্দরী। আনোয়ার মেম্বরের কু- নজর পড়ে তার দিকে। এরপর বিল্লালের স্ত্রীকে এক হিন্দুর বিয়ের বরযাত্রী হিসেবে নিয়ে যায় এবং সারা রাত মদ পান করে ফুর্তি মারে।
Attachments area

শেয়ার করুন

0 facebook: