Monday, January 29, 2018

দেড় মাস পেরিয়ে গেলেও সাফিন হত্যা মামলার এজাহার নামীয় আসামীরা ধরাছোঁয়ার বাইরে

দেড় মাস পেরিয়ে গেলেও
সাফিন হত্যা মামলার এজাহার নামীয় আসামীরা ধরাছোঁয়ার বাইরে


মাসুদ রেজা শিশির 

 রাজবাড়ীর জেলার পাংশা উপজেলার হাবাসপুর ইউনিয়নের চরঝিকড়ী গ্রামের বেরী বাঁধ এলাকায় আখ ক্ষেত থেকে গত ১৭ ডিসেম্বর সাফিন খান নামের একজনের লাশ উদ্ধার করে পাংশা থানা পুলিশ। সাফিন কুষ্টিয়া জেলার খোকসার উপজেলার আমবাড়ীয়া ইউনিয়নের আবু বক্কার খান এর ছেলে। এ ঘটনায় দেড় মাস পেরিয়ে গেলেও এজাহার নামীয় কোন আসামীকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। সাফিন হত্যার ঘটনায় তার ভাই ফরিদ হাসান  বাদী হয়ে পাংশা থানায় ৫ জনের নাম উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলার দায়ের করেন। মামলা নং-০৬, তারিখ: ১৮/১২/২০১৭। আসামীরা হলো- ১) আরিফ মোল্লা, পিং-মৃত ছালাম মোল্লা, ২) রাজিব মোল্লা, পিং-আব্দুল ছাত্তার মোল্লা, ৩) সবুজ মোল্লা, পিং-মোঃ আবু মোল্লা, ৪) সাগর মোল্লা, পিং- মৃত মোতালেব মোল্লা, ৫) মোঃ সুমন, পিং-রহিম মাস্টার, সাং-ভবানীগঞ্জ, থানা-খোকসা, জেলা- কুষ্টিয়া। এজাহার সূত্রে জানা যায়, সাফিন খান দীর্ঘ ১৮ বৎসর সৌদি আরবে ছিল। ৪ বৎসর পূর্বে সাফিন দেশে এসে বেকার অবস্থায় কাটানোর পর ১ বছর পূর্বে মাটি ও বালির ব্যবসায়ী শুরু করে। পরিবারের দাবী মাটি-বালির ব্যবসাকে কেন্দ্র করে উল্লেখিত আসামীগণ সাফিনকে হত্যা করে। এ মামলায় সন্দিগ্ধ আসামী ১) রুহুল আমিন প্রামানিক (৪২), পিং-মৃত ইব্রাহিম প্রামানিক, সাং-মধ্য আমবাড়িয়া, থানা-খোকসা, জেলা- কুষ্টিয়া ও ২) কানন প্রামানিক (৩০), পিং-আশরাফ প্রামানিক, সাং-সেনগ্রাম নদীর ঘাট, থানা-পাংশা,জেলা- রাজবাড়ীকে পাংশা থানা পুলিশ গ্রেফতার করে। এদের মধ্যে সন্দিগ্ধ আসামী রুহুল প্রামানিক স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। জবানবন্দিতে রুহুল প্রামানিক উল্লেখ করে ১৬/১২/২০১৭ তারিখ বিকাল ৩.০৫ ঘটিকার সময় পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী সাফিন খান  বিবাহের উদ্দেশ্যে মেয়ে দেখার জন্য তার বাড়িতে যায়। সেখান থেকে রুহুল প্রামানিক মোটর সাইকেলে কুলসুম বিবি, স্বামী-মৃত শহিদ সরদার ওরফে কালু সরদারের বাড়ীতে যায়। অত:পর সেনগ্রাম কালিতলা বাজারে আসিয়া হাকিম প্রামানিকের চায়ের দোকান থেকে চা খায় এবং আঃ সাত্তার চেয়ারম্যানের নির্দেশনা মতে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী রুহুল প্রামানিক সাফিনকে মেয়ে দেখানোর জন্য হাবাসপুর বাজার এলাকায় ঘুরাইয়া পাংশা থানাধীন হাবাসপুর ইউনিয়নের চরঝিকড়ী বেরী বাঁধের রাস্তায় নিয়ে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী আসামী আরিফ মোল্লা, রাজিব মোল্লা, সবুজ মোল্লা, সাগর মোল্লা, মোঃ সুমন সহ খোকন শেখ, আলিম মোল্লা, সামাদ মন্ডল এবং অজ্ঞাত ২/৩ জন অবস্থান করে। রুহুল প্রামানিক কৌশলে সাফিন খানকে নিয়ে বেরীবাঁধের রাস্তায় পৌঁছালে মোটরসাইকেল থামালে আসামীরা সাফিন খানকে ধারালো ছুরি এবং কাঠের মুগুর দিয়ে মাথা, মুখমন্ডল সহ শরীরের বিভিন্নস্থানে আঘাত করিয়া হত্যা করে এবং লাশ গুম করার জন্য পাশেই জনৈক মোঃ মফিজ উদ্দিন মন্ডলের আখ ক্ষেতের মধ্যে লাশ ফেলে রেখে যায়। এ মামলার বাদী নিহতের ভাই ফরিদ হাসান জানান, হত্যাকান্ডের ঘটনায় এজাহার নামীয় মোঃ সুমনকে এলাকাবাসী আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। আটকের পর পুলিশ মোঃ সুমনকে ছেড়ে দেয়। রুহুল আমিনের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে সুমনের নাম থাকা সত্ত্বেও সুমনকে কেন ছেড়ে দেয়া হল এ প্রশ্ন নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসীর। সুমনকে ছেড়ে দেয়ায় বাদীপক্ষ ক্ষুব্ধ ও হতাশ!
 মামলার বাদী ফরিদ হাসান আরো জানান, বিভিন্ন সময় পুলিশ এলাকায় আসলেও আসামীদের গ্রেফতারে তেমন কোন ভূমিকা দেখিনা। সাফিন হত্যার ঘটনায় সুষ্ঠ বিচারের দাবীতে নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসী মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল ও সংবাদ সম্মেলন সহ বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করে আসছে। সাফিন হত্যাকান্ডের ঘটনায় সুমনকে কেন ছেড়ে দেয়া হল এমন প্রশ্নের জবাবে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস,আই শাহীন মোল্যা জানান, মামলা রুজু হওয়ার আগে সুমনকে আটক করা হয়। সুমন সরকারি চাকুরি করায় প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। তবে মামলার এজাহারভুক্ত আসামীদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ইতিমধ্যে মামলার রহস্য উদঘাটন হয়েছে অচিরেই এ মামলার আসামীরা গ্রেফতার হবে বলে তিনি জানান। 


শেয়ার করুন

0 facebook: