Monday, May 21, 2018

শ্রমিক আন্দোলনের কারনে ৮দিন বন্ধ থাকার পর পার্বতীপুরের বড়পুকুরিয়া খনিতে চীনা শ্রমিক দিয়ে কয়লা উৎপাদন শুরু


শ্রমিক আন্দোলনের কারনে ৮দিন বন্ধ থাকার পর
পার্বতীপুরের বড়পুকুরিয়া খনিতে
 চীনা শ্রমিক দিয়ে কয়লা উৎপাদন শুরু


এম এ আলম বাবলু


খনি শ্রমিকেরা নবম দিনের মত কর্মবিরতি অব্যাহত রাখলেও দেশীয় শ্রমিকদের চলমান আন্দোলনের মুখে ৮ দিন বন্ধ থাকার পর  পার্বতীপুরের বড়পুকুরিয়া খনিতে চীনা শ্রমিক দিয়ে কয়লা উৎপাদন শুরু করা হয়েছে।
আজ সোমবার সকাল থেকে খনির এমপিএমঅ্যান্ডপি (উৎপাদন, ব্যবস্থাপনা, রক্ষণাবেক্ষণ ও প্রভিশনিং সার্ভিসেস) চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিএমসি-এক্সএমসি কনসোর্টিয়াম চীনা শ্রমিক দিয়ে কয়লা উৎপাদন শুরু করেছে বলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন।।
বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডের (বিসিএমসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী হাবিব উদ্দিন আহমদ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছেন, খনিতে তিন শতাধিক চীনা শ্রমিক-প্রকৌশলী রয়েছেন। দেশীয় শ্রমিক ৮ দিনেও কাজে না ফেরায় চীনা শ্রমিক-প্রকৌশলী দিয়েই প্রতিদিন এক শিফটে কয়লা উৎপাদনের সিদ্ধান্ত নেয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিএমসি-এক্সএমসি কনসোর্টিয়াম।
তিনি আরও বলেন, শ্রমিকদের চলমান আন্দোলন নিয়ে গতকাল রোববার সরকারের উচ্চ পর্যায়ে আলোচনা হয়েছে। স্থানীয় সংসদ সদস্য প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী এ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান, জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এমপি, জ্বালানি সচিব, পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। সেখানে শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনার জন্য উচ্চ পর্যায়ের ৩ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির সদস্যরা এসে শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন। তার আগে শ্রমিকদের কাজে ফিরতে হবে বলে তিনি জানান।
উল্লেখ্য, ১৩ দফা দাবিতে ১৩ মে থেকে খনি গেটের সামনে অবস্থান নিয়ে খনি শ্রমিকরা অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি পালন করে আসছে। ১৫ মে শ্রমিকদের সঙ্গে খনি কর্মকর্তাদের সংঘর্ষ হয়। এতে খনির ৯ কর্মকর্তা, ৫ শ্রমিক, ২ পুলিশ সদস্যসহ ২০ জন গুরুতর আহত হয়। এর আগে ১৪ মে শ্রমিকদের হামলায় এক খনি কর্মচারী আহত হয়।
এ দু’টি ঘটনায় খনির ব্যবস্থাপক (নিরাপত্তা) সৈয়দ ইমাম হাসান বাদী হয়ে শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন সভাপতি রবিউল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক আবু সুফিয়ান, সাবেক সভাপতি ওয়াজেদ আলী, খনি এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত ২০ গ্রামের সমন্বয় কমিটির সদস্য মশিউর রহমান বুলবুল, মিজানুর রহমানসহ ৪০ জন ও অজ্ঞাতনামা ৭০ সহ মোট ১১০ জনকে আসামি করে ১৬ মে পার্বতীপুর মডেল থানায় পৃথক দু’টি মামলা দায়ের করে।
একই ঘটনায় বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আবু সুফিয়ান বড়পুকুরয়িা কয়লা খনির
১৪ জন র্কমর্কতাকে আসামি করে দিনাজপুর চিফ জুডশিয়িাল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছেন বলে জানা গেছে।
পার্বতীপুরের বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানী লিঃ এর একটি নির্ভরশীল সূত্র থেকে জানা গেছে, বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানী লিমিটেড (বিসিএমসিএল) প্রাতিষ্ঠানিক সামাজিক দায়বদ্ধতার অংশ হিসেবে বৈদেশিক ঠিকাদার এক্সএমসি-সিএমসি কনসোর্টিয়ামের নিয়োজিত বাংলাদেশী খনি শ্রমিক এবং তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে নিয়োজিত কর্মচারীদেরকে অনুদান/আর্থিক সহায়তা প্রদান করে আসছে। বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতে কর্মরত অবস্থায় অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনায় নিহত ৭ (সাত) জন শ্রমিকের পরিবার এবং পঙ্গুত্ববরণকারী ৬ (ছয়) জন শ্রমিককে জীবনধারণে সহায়তা প্রদান কল্পে মাসিক ভোগভাতা/আর্থিক সহায়তা হিসেবে কোম্পানির সিএসআর ফান্ড হতে যথাক্রমে ৪,০০০/- (চার হাজার) এবং ৩,০০০/ (তিন হাজার) টাকা করে প্রদান করা হচ্ছে। এ ধারাবাহিকতায় ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরে কোম্পানির সিএসআর ফান্ড হতে বৈদেশিক ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এক্সএমসি-সিএমসি কনসোর্টিয়ামের ৩ (তিন) জন বাংলাদেশী খনি শ্রমিক এবং তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে নিয়োজিত ২ (দুই) জন কর্মচারী/পরিবারকে অনুদান হিসেবে মোট ৯ লক্ষ ২০ হাজার টাকা প্রদান করা হয়।



শেয়ার করুন

0 facebook: